নিউজ বাংলা অনলাইন ডেস্ক,রান্নাঘর : নববর্ষ মানেই খাঁটি বাঙালিয়ানা – তা সে পাতে না থাক, মনেপ্রাণে তো থাকেই!
বছরের বাকি দিনগুলোতে যতই মোমো, পাস্তা আর কন্টিনেন্টালের প্রতি টান থাকুক না কেন, নববর্ষে কিন্তু বাঙালির রসনা খাঁটি বাঙালি রান্নাই চায়। আজ আর ঠাকুমা-মার হাতের রান্নার ঘ্রাণে নয়, বরং শহরের ঝাঁ-চকচকে রেস্তরাঁয় পঞ্চব্যঞ্জনের ভোজে বর্ষবরণ হয়। ধুতি-পাঞ্জাবি আর লাল পাড় সাদা শাড়িতে সেজে ওঠে শহর, আর পাতে ওঠে পোলাও, মাছের পাতুরি, চাটনি আর আরও অনেক কিছু।
তবে একথাও সত্যি—”খাঁটি বাঙালি খাবার” বলে আলাদা করে কিছু আর প্রায় নেই। এপার বাংলার পোস্ত হোক বা ওপার বাংলার ইলিশ ভর্তা—সবেতেই এখন ‘ফিউশন’ এর ছোঁয়া। নামী রেস্তরাঁ আর শেফদের সৌজন্যে তৈরি হচ্ছে মিশ্র স্বাদের নতুন নতুন পদ, যার রন্ধনপ্রণালী শেখা যাচ্ছে রিল আর রিল-এ।
তবুও, এই ফিউশনের ভিড়েও পুরনো স্বাদের আকর্ষণ একেবারে হারিয়ে যায়নি। মায়েদের হেঁশেলে এমন অনেক পদ আজও আছে, যা রেস্তরাঁর মেনুতে দেখা ভার। তার মধ্যেই এক অনন্য পদ—ভর্তা। ওপার বাংলায় যার উৎপত্তি হলেও, এপার বাংলায় তার কদর কম কিছু নয়। ইলিশ ভর্তা, চিংড়ি ভর্তা, কিংবা আলু-বেগুন—সবই আজও রসনাপরায়ণ বাঙালির হেঁশেলে স্বমহিমায় বিরাজমান।
তেমনই এক পদ হল কাচকি মাছের ভর্তা। ছোট মাছের মধ্যে কাচকি যতটা সুস্বাদু, ততটাই অবহেলিত। ঝাল, টক কিংবা চচ্চড়ি হয়ে গেলেও, ভর্তা হিসেবে কাচকি মাছের ব্যবহার খুব একটা দেখা যায় না। কিন্তু একবার খেলে মনেই হবে—এতদিন কেন রান্না করিনি!
পয়লা বৈশাখে মধ্যাহ্নভোজে আত্মীয়-পরিজনকে একটু ভিন্ন স্বাদের কিছু খাওয়াতে চাইলে কাচকি মাছের ভর্তা রাখতেই পারেন মেনুতে। স্বাদে, ঘ্রাণে এবং সহজ প্রণালীতে এটি যে কারোর মন জয় করে নেবে।
কাচকি মাছের ভর্তা – রেসিপি
উপকরণ:
- কাচকি মাছ – ২৫০ গ্রাম
- পেঁয়াজ কুচি – ২টি (মাঝারি আকারের)
- রসুন বাটা – ১ চা চামচ
- কাঁচালঙ্কা – ৩-৪টি (পরিমাণটা ঝাল অনুযায়ী)
- পাতিলেবুর রস – ১ চা চামচ
- ধনেপাতা কুচি – স্বাদমতো
- নুন – স্বাদমতো
- সর্ষের তেল – ২ চা চামচ
প্রণালী:
১. কাচকি মাছ ভালো করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিন।
2. অল্প লবণ দিয়ে সামান্য ভেজে নিন (তেলে বা শুকনো তাওয়ায়)।
3. ভাজা মাছ ঠান্ডা হলে একটি বাটিতে নিয়ে চটকে নিন।
4. এবার তাতে কুচোনো পেঁয়াজ, রসুন বাটা, কাঁচালঙ্কা, ধনেপাতা, লেবুর রস এবং সর্ষের তেল মিশিয়ে নিন।
5. সবকিছু ভালোভাবে মেখে নিয়ে পরিবেশন করুন গরম ভাতের সঙ্গে।