নিউজ বাংলা অনলাইন ডেস্ক, মালদা,পশ্চিমবঙ্গ : ঘরে ফেরার বিষয়ে পুলিশ বারবার আশ্বস্ত করলেও, মঙ্গলবার মালদহের পারলালপুর হাই স্কুলে থাকা শিবির থেকে কেউই গঙ্গার ওপারে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে নিজের বাড়িতে ফিরে যাননি। উলটে, আরও দু’টি পরিবার ওই শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।
সূত্রের খবর, শুক্রবার সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদ ঘিরে ধুলিয়ানে গোলমালের সময় বেতবোনা এলাকার ওই দুই পরিবার গঙ্গা পেরিয়ে ডিঙিনৌকায় পারলালপুরে আত্মীয়দের বাড়িতে উঠেছিলেন। পরে তাঁরা পারলালপুর হাই স্কুলে থাকা এই ত্রাণ শিবিরে চলে আসেন।
শিবিরে আশ্রয় নেওয়া বিকাশ মণ্ডল জানান, “শুক্রবার আমাদের বাড়িতে লুটপাট হয়, এমনকি আগুন লাগানোর চেষ্টাও করা হয়। প্রাণ বাঁচাতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পারলালপুরে আত্মীয়র বাড়িতে আশ্রয় নিই। পরে জানতে পারি, এলাকার আরও অনেকে স্কুলের এই শিবিরে আছে, তাই আমরাও এখানে চলে আসি। এখনই বাড়ি ফিরতে চাই না। বিএসএফ, পুলিশ টহল দিলেও পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ভরসা পাচ্ছি না।”
পুলিশ অবশ্য বারবার আশ্রিতদের ঘরে ফেরার জন্য আশ্বস্ত করছে। সোমবার রাতে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় এবং মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব শিবিরে গিয়ে আশ্রিতদের সঙ্গে কথা বলেন ও অভয় দেওয়ার চেষ্টা করেন।
বেতবোনার আর এক আশ্রিত সুভাষ মণ্ডল বলেন, “আমার ঘরেও লুটপাট হয়েছে। সব আসবাবপত্র, খাট ভেঙে ফেলা হয়েছে। ঘরে মজুত চাল পর্যন্ত নিয়ে গেছে। ওই অবস্থায় পরিবার নিয়ে সেই ঘরে কীভাবে থাকব? তাছাড়া আমরা দিনমজুর, এলাকায় ফিরে কাজও পাব না। তাহলে না খেয়েই থাকতে হবে সন্তানদের নিয়ে।”
এ দিনও কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লক প্রশাসনের তরফে চার বেলা রান্না ও শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে আশ্রিতদের। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘও শুকনো খাবার দিয়েছে।
মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু শিশুদের জামাকাপড় ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন। বিকেলে শিবিরে আশ্রিতদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন মালদহ দক্ষিণের কংগ্রেস সাংসদ ইশা খান চৌধুরী। তবে কিছু লোকের বাধায় তিনি স্কুলের ভিতরে ঢুকতে পারেননি। ইশা জানান, “স্কুল গেটের বাইরে কিছু মানুষ অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করায় আমি শিবিরে ঢুকতে পারিনি। বাইরে থেকেই এলাকার মানুষদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং সম্প্রীতি বজায় রাখার বার্তা দিয়েছি।”