মুর্শিদাবাদের অশান্তি নিয়ে প্রথমবার বৈঠকে বসল রাজ্য পুলিশের সিট, শমসেরগঞ্জ থানায় বৈঠকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল গোয়েন্দা বিভাগের ব্যর্থতা।

মুর্শিদাবাদের অশান্তি নিয়ে প্রথমবার বৈঠকে বসল রাজ্য পুলিশের সিট, শমসেরগঞ্জ থানায় বৈঠকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল গোয়েন্দা বিভাগের ব্যর্থতা।

Spread the love

নিউজ বাংলা অনলাইন ডেস্ক, মুর্শিদাবাদ : মুর্শিদাবাদের অশান্তি: SIT বৈঠকে গোয়েন্দা ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা, তদন্তে জোর

মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক অশান্তির তদন্তে রাজ্য পুলিশের গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT)-এর প্রথম বৈঠকে ‘গোয়েন্দা ব্যর্থতা’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। বুধবার রাতে শমসেরগঞ্জ থানায় এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন SIT প্রধান ও রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। রাত ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলা এই বৈঠকে ২০ সদস্যের দলের মধ্যে ৯ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বাকি সদস্যরা বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে রওনা দিয়ে দলে যোগ দিচ্ছেন।

সূত্র অনুযায়ী, সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় গত শুক্রবার জঙ্গিপুর, সুতি, ও শমসেরগঞ্জ এলাকায় যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল, সেটিকে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ বলে মনে করছে SIT-এর একাংশ। তিনজনের মৃত্যুর ঘটনার পর বুধবার SIT গঠন করা হয়। দলের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন জঙ্গিপুর জেলা পুলিশ সুপার আনন্দ রায়, সুতি, শমসেরগঞ্জ ও ফরাক্কার ওসি-সহ অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকরা।

বৈঠকে মূলত তিনটি থানা এলাকার জমায়েত থেকে দ্রুত হিংসা ছড়িয়ে পড়ার প্রসঙ্গ উঠে আসে। গোয়েন্দা বিভাগ পূর্বাভাস দিতে ব্যর্থ হওয়ায় পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় বলে অনেকে মনে করছেন। বৈঠকে ধৃত নাবালকদের জেরা করে তথ্য সংগ্রহের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, গোয়েন্দা বিভাগের অভিজ্ঞ আধিকারিকেরা এই জেরা পরিচালনা করবেন, যাতে হিংসার পিছনে থাকা মূল পরিকল্পনার সূত্র মিলতে পারে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, এই ঘটনায় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)-কে তদন্তভার দেওয়ার আবেদনও হাই কোর্টে করা হয়েছে। সেই আবহে SIT তদন্তে গতি আনার বিষয়ে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর যৌথ তৎপরতায় স্থিতিশীলতা ফিরছে এলাকাগুলিতে। বৃহস্পতিবার ধুলিয়ান ও সুতি থানা এলাকায় নতুন করে কোনও হিংসার খবর নেই। শমসেরগঞ্জেও জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। দোকানপাট খুলেছে, বাজারে ভিড়, যান চলাচল ও যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে অনেকের মনেই এখনো উদ্বেগ রয়ে গেছে।

SIT-এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তদন্তকারীরা স্থানীয় থানার পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে হিংসাপ্রবণ এলাকাগুলিতে ঘুরে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করবেন। পাশাপাশি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং গুজব ঠেকাতে কিছু এলাকায় সাময়িক ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল। বুধবার থেকে শমসেরগঞ্জ ছাড়া বাকি এলাকায় তা ফের চালু করা হয়েছে।

এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম ইতিমধ্যেই সতর্কবার্তা দিয়েছেন—দোষীদের রেয়াত করা হবে না। সেই অনুযায়ী জোড়া খুনের ঘটনায় দুই অভিযুক্তকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয়েছে।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *