আমি বলছি মা, আমি চিপস চুরি করিনি, কুড়িয়ে পেয়েছিলাম…

আমি বলছি মা, আমি চিপস চুরি করিনি, কুড়িয়ে পেয়েছিলাম…

Spread the love

নিউজ বাংলা অনলাইন ডেস্ক, অভিজিৎ, পাঁশকুড়া : পাঁশকুড়ায় ‘চুরি’র অপবাদ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা, মৃত্যু সপ্তম শ্রেণির ছাত্রের

“চিপস চুরি করিনি, কুড়িয়ে পেয়েছিলাম…” — এটিই ছিল কৃষ্ণেন্দু দাসের শেষ বক্তব্য। সপ্তম শ্রেণির ছাত্রটি রবিবার চিপস কিনতে গিয়ে বাজার থেকে ফিরে আর বাঁচল না।

পাঁশকুড়ার গোঁসাইবেড় বাজারের একটি ছোট ঘটনা রূপ নিয়েছে এক ভয়ঙ্কর পরিণতিতে। সপ্তম শ্রেণির ছাত্র কৃষ্ণেন্দু দাস রবিবার বিকেলে চিপস কিনতে গিয়েছিল। কিন্তু দোকানে গিয়ে দেখে, চিপস নেই, দোকানদারও অনুপস্থিত। তখনই সে দোকানের সামনের রাস্তা থেকে একটি পড়ে থাকা চিপসের প্যাকেট কুড়িয়ে নেয়।

এই ‘অপরাধে’ শুভঙ্কর দীক্ষিত নামে দোকানদার, যিনি আবার পেশায় একজন সিভিক ভলান্টিয়ার, মোটরবাইক নিয়ে কৃষ্ণেন্দুর পেছনে ধাওয়া করেন। বাজারে জনসমক্ষে তাকে চোর বলে অপবাদ দেন, কান ধরে ওঠবস করান, এবং মারধর করেন।

পরিবার জানায়, কৃষ্ণেন্দু সেই সময় শুভঙ্করকে চিপসের দামও দিয়েছিল। ঘটনার সময় মা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন, শাসন করেছিলেন ছেলেকে।

কিন্তু সমাজের এই লাঞ্ছনা সহ্য করতে পারেনি ১৩ বছরের কৃষ্ণেন্দু। রাতে একটি সুইসাইড নোট রেখে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে। পরদিন সকালে তমলুক মেডিকেল কলেজে মৃত্যু হয় তার।

শোকস্তব্ধ পরিবার, প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। শুভঙ্করের বিরুদ্ধে এখনও কোনও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি সিসিটিভি ফুটেজও প্রকাশে অস্বীকার করেছেন।শুভঙ্করের পক্ষ থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

প্রশ্ন উঠছে, একজন আইনরক্ষক হয়েও কিভাবে নিজেই আইন ভেঙে ফেললেন শুভঙ্কর দীক্ষিত?
এই ঘটনা শুধুই একটি মৃত্যুর নয় — এটি মানবিকতার মৃত্যু, সহানুভূতির ক্ষয়।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *