নিউজ বাংলা অনলাইন ডেস্ক,পুরুলিয়া : PURULIA রামনবমী ও হনুমান জয়ন্তীতে দলমত ভুলে একত্রে পা তোলেন তৃণমূল ও বিজেপি নেতৃত্ব
রামনবমী ও হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রা যেন হয়ে উঠল রাজনৈতিক সৌহার্দ্যের এক উজ্জ্বল নিদর্শন। শনিবার ঝালদা শহরের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাঁটলেন বিজেপি ও তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলের উদ্যোগে সত্যভামা স্কুল মাঠ থেকে শুরু হয় এই শোভাযাত্রা, যা শহরের বিভিন্ন পথ অতিক্রম করে।
পুরুলিয়া জেলা বিজেপি সভাপতি শঙ্কর মাহাতো তাঁর দলীয় কর্মীদের সঙ্গে এই মিছিল অংশ নেন। পাশাপাশি ঝালদা শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি চিরঞ্জীব চন্দ্রও দলের কর্মীদের নিয়ে হাঁটেন শোভাযাত্রায়। রাজনৈতিক বিভেদের ঊর্ধ্বে উঠে, উৎসবকে গুরুত্ব দেওয়ার বার্তাই দিলেন দুই নেতা। শঙ্করের কথায়, “আমি কোনও রাজনৈতিক পরিচয়ে নয়, বরং শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব উদযাপনের বার্তা দিতেই এই মিছিলে নেমেছি।” চিরঞ্জীব বলেন, “ধর্ম ব্যক্তিগত, কিন্তু উৎসব সবার। সবাই খুব উৎসাহ নিয়ে শামিল হয়েছেন।”
শোভাযাত্রা ঘিরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন। গোটা পথজুড়ে পুলিশ ও র্যাফের নজরদারি ছিল চোখে পড়ার মতো। আকাশপথে ছিল ড্রোনের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ। নিরাপত্তা ব্যবস্থার তদারকিতে ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং।
মিছিলটি শহরের বাসস্ট্যান্ড পেরিয়ে বাঁধাঘাট হয়ে শহরের অলি-গলিতে প্রবেশ করে। আয়োজকদের দাবি, প্রায় আট হাজার মানুষ এই শোভাযাত্রায় অংশ নেন। চোখে পড়ার মতো ছিল মহিলাদের অংশগ্রহণও।
একই দিন সকালে পুরুলিয়া শহরেও সঙ্কটমোচন ভূতনাথ মন্দির কমিটির উদ্যোগে একটি শোভাযাত্রা বের হয়, যা শহর ঘুরে গোশালার হনুমান মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। বাঁকুড়ার বিভিন্ন প্রান্তেও হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে নানা কর্মসূচি নেয় বিজেপি। শহরের গাড়িগুলিতে গেরুয়া পতাকা বাঁধার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সতীঘাটে বিজেপি কর্মীরা বিভিন্ন যানবাহনে পতাকা বেঁধে কর্মসূচি পালন করেন। বড়জোড়ার মালিয়াড়ায় বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজিত অগস্তিকে একটি ডাম্পারের ইঞ্জিনে উঠে পতাকা বাঁধতে দেখা যায়।
বাঁকুড়ার সোনামুখী, বিষ্ণুপুর-সহ জেলা জুড়েই এই কর্মসূচি চলে। সতীঘাটের হনুমান মন্দিরে সকাল থেকেই ছিল ভক্তদের উপচে পড়া ভিড়। বিভিন্ন মন্দিরে আয়োজন করা হয় বিশেষ পুজোর। কিছু এলাকায় স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ও বাসিন্দাদের উদ্যোগে ছোট আকারের মিছিলও বের হয়।
জেলার শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সব মিছিল হয়েছে বলেই জানান বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি।