নিউজ বাংলা অনলাইন ডেস্ক, শরীর ও স্বাস্থ্য: লিভারের অসুখ মানেই কি খাওয়া-দাওয়া বন্ধ?
অনেকেই মনে করেন, লিভারে সমস্যা ধরা পড়লেই সব রকম খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে জন্ডিস হলে ভয় আরও বেড়ে যায়। কিন্তু শুধু একবার ফ্যাটি লিভার বা জন্ডিস ধরা পড়া মানেই বিপদ নয়—তবে এটাকে হেলাফেলা করলে ভবিষ্যতে বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে। বর্তমানে ভারতে তরুণদের মধ্যে লিভারের অসুখ, বিশেষত ফ্যাটি লিভার, খুব দ্রুত বাড়ছে। সময়মতো চিকিৎসা না হলে এটি সিরোসিস বা এমনকি ক্যানসারে রূপ নিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আমাদের দৈনন্দিন কিছু অভ্যাসই লিভার ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা ও শরীরচর্চার অভাব—এই তিনটি প্রধান কারণ লিভারের জটিল অসুখ ডেকে আনতে পারে।
কোন অভ্যাসগুলো ক্যানসারের কারণ হতে পারে?
- প্রক্রিয়াজাত খাবার ও অ্যালকোহল
জাঙ্ক ফুড, ফ্রিজে রাখা পুরনো খাবার, আচার ইত্যাদিতে থাকা রাসায়নিক ও ছত্রাকের বিষাক্ত উপাদান যেমন আফলাটক্সিন, যকৃতের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। অ্যালকোহলও লিভার, পাকস্থলী ও স্তনের ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটা বাড়ায়। - দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা
দিনে ১০-১২ ঘণ্টা বসে থাকলে শরীরে টক্সিন জমে ও ক্যানসারের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা কোনো রকম কায়িক শ্রম করেন না, তাঁদের ক্ষেত্রে ক্যানসারের আশঙ্কা প্রায় ৮২% বেশি। - শরীরচর্চার অভাব
নিয়মিত ব্যায়াম না করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। শরীরে জমা টক্সিন সহজেই ক্যানসার সৃষ্টিকারী কোষ গঠনে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন শরীরচর্চা করাটা খুবই জরুরি।
লিভার ক্যানসারের ধরন
বিশেষজ্ঞ অনুভব হরিশ খন্ডেলওয়াল জানাচ্ছেন, লিভার ক্যানসার প্রধানত দুই ধরনের—
- প্রাইমারি লিভার ক্যানসার (হেপাটোসেলুলার): সাধারণত ৪০-৫০ বছর বয়সে দেখা দেয়।
- সেকেন্ডারি লিভার ক্যানসার (মেটাস্ট্যাটিক): অন্য অঙ্গে ক্যানসার হলে তা ছড়িয়ে লিভারেও প্রভাব ফেলতে পারে।
ভারতে বছরে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হন এবং ৩০-৩৪ হাজার মানুষ মারা যান।
উপসংহার
লিভারের সমস্যা হালকাভাবে নেওয়া একেবারেই ঠিক নয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, এবং সচেতন জীবনযাপনই হতে পারে এই মারাত্মক রোগ থেকে বাঁচার চাবিকাঠি।