নিউজ বাংলা অনলাইন ডেস্ক, জম্মু ও কাশ্মীর, ভারত : Kashmir Terror Attack: নিশংসতা, বিভীষিকা আর রক্তাক্ত আতঙ্ক—ফের জঙ্গি হানায় কাঁপল কাশ্মীর।
পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর বর্বর হামলা চালিয়ে, ধর্মীয় পরিচয় জেনে টার্গেট করে গুলি চালাল জঙ্গিরা। এক মহিলার স্বামীকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে তারা। অসহায় হয়ে স্ত্রী চিৎকার করে ওঠেন, “আমাকেও মারো!” কিন্তু জঙ্গিদের উত্তর আরও বিভীষিকাময়—বন্দুক ঠেকিয়ে বলল, “তোমাকে মারব না। তোমার স্বামীকে মেরেছি। যাও, মোদিকে বলো!”
চোখে জল, গলার কাঁপুনিতে কাঁদতে কাঁদতে ভয়ঙ্কর সেই রাতের বিবরণ দিলেন ওই মহিলা।
সূত্র অনুযায়ী, পহেলগাঁওয়ের বৈসরণ উপত্যকার এক রিসর্টে আচমকাই হামলা চালায় লস্করের জঙ্গিরা। কেউ খেতে বসেছিলেন, কেউ প্রকৃতি দেখতে বেরিয়েছিলেন। সেই সময় একাধিক জঙ্গি ঢুকে পড়ে, নাম জিজ্ঞেস করে করে গুলি চালাতে থাকে। অন্তত ৪০ রাউন্ড গুলি চলে বলে জানা গিয়েছে।
এখনও পর্যন্ত ২৮ জনের বেশি মৃত্যুর আশঙ্কা, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন বিদেশি পর্যটকরাও। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “ভেলপুরি খাচ্ছিলাম, হঠাৎ শুরু হয়ে গেল গুলির শব্দ। প্রাণভয়ে দৌড়োতে শুরু করি।” হামলার পর মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্কের ভিডিও—চারদিকে চিৎকার, রক্ত, ছুটোছুটি।
এই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে লস্করের ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ বা TRF। প্রশ্ন উঠছে, হামলাকারীরা কি স্থানীয়, নাকি সীমান্তপারের জঙ্গি? গোয়েন্দা সূত্রে আগে থেকে কোনও তথ্য ছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পর্যটকদের উপর এই নৃশংস জঙ্গি হানায় কেন্দ্রের তরফে কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, “দোষীদের কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই আরও জোরদার হবে। এই জঘন্য হামলার জবাব দিতেই হবে।”
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু একে ‘পুরুষোচিত ও অমানবিক’ আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। আহত ও নিহতদের পরিবারের প্রতি জানিয়েছেন সমবেদনা।
এই ঘটনায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাও—”যারা এই হামলা চালিয়েছে, তারা মানুষ নয়, বর্বর পশু।”
ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ইতিমধ্যেই শ্রীনগর রওনা হয়েছেন। সেনা ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি। তদন্তে মূল ফোকাস—জঙ্গিরা কোথা থেকে এলো, হামলার আগে কোনও গোয়েন্দা বার্তা ছিল কি না, এবং কীভাবে নিরাপত্তা ব্যর্থ হল।
পুলওয়ামার পর ফের কাশ্মীরে ভয়াবহ জঙ্গি হানা—ভারত আবার এক বিভীষিকাময় অধ্যায়ের মুখোমুখি।