আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনা: অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে গেলেন ১১এ সিটের যাত্রী রমেশ বিশ্বাসকুমার

আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনা: অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে গেলেন ১১এ সিটের যাত্রী রমেশ বিশ্বাসকুমার

Spread the love

নিউজ বাংলা অনলাইন ডেস্ক, আহমেদাবাদ : আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় (Ahmedabad Plane Crash) যখন চারিদিকে মৃত্যুমিছিল, ঠিক তখনই ঘটেছে এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। বিমানের ১১এ নম্বর সিটে বসা যাত্রী রমেশ বিশ্বাসকুমার মিরাকলভাবে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। সামান্য আঘাত পেলেও তিনি গুরুতর কোনও ক্ষতির সম্মুখীন হননি। এই ঘটনায় চমকে উঠেছে সবাই। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে—এই প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার মধ্যেও কীভাবে বেঁচে ফিরলেন তিনি?

দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপট:

ঘটনার দিন বোয়িং মডেলের ওই বিমানে রমেশ বসেছিলেন ১১এ নম্বর সিটে—বাম পাশে জানালার ঠিক ধার ঘেঁষে থাকা আসন, যা ইকোনমি ক্লাসের একেবারে সামনের সারি থেকে শুরু হয়। এই আসনের সামনে সাধারণত একটি ওয়াশরুম ও কেবিন ডিভাইডার থাকে, যা দুর্ঘটনার সময় ধাক্কা শোষণে কিছুটা ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়াও এই আসনগুলি তুলনামূলকভাবে বড় পিচ, বেশি লেগরুম ও শক্তিশালী সিট কাঠামোসহ তৈরি থাকে।

কীভাবে প্রাণে রক্ষা পেলেন তিনি:

১. অবস্থানগত সুবিধা:
১১এ সিটটি বিমানের সামনে হলেও ককপিট বা মিডবডি অংশের সরাসরি সংস্পর্শে নয়। জানালার ধার ঘেঁষা ও সাইড অফসেট হওয়ায় সরাসরি ধাক্কার প্রভাব কিছুটা কমে যেতে পারে।

  1. সিটের গঠন ও নিরাপত্তা:
    এই ধরণের সিটে সাধারণত প্রিমিয়াম ফ্রেমিং, শক-অ্যাবজর্বিং ম্যাটেরিয়াল ও অগ্নি প্রতিরোধক আবরণ থাকে, যা দুর্ঘটনার সময়ে অতিরিক্ত সুরক্ষা দেয়।
  2. ইমারজেন্সি এক্সিটের কাছাকাছি অবস্থান:
    ১১এ যদি এক্সিট গেটের কাছাকাছি হয়, তাহলে দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার সুবিধা মেলে। দুর্ঘটনার সময় ধোঁয়া বা আগুন ছড়ানোর আগেই বেরিয়ে আসা সম্ভব হয়। এটাই ‘গোল্ডেন মিনিট’ নামে পরিচিত—যা কোনও যাত্রীর জীবন বাঁচাতে পারে।

সিট কি সত্যিই জীবন বাঁচাতে পারে?

বিমান নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, বিমানের পেছনের অংশে বসা যাত্রীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯%। তবে জানালার ধার বা এক্সিট গেটের কাছাকাছি বসলে এই সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়। যদিও এসব পরিসংখ্যান সামগ্রিক পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে তৈরি—প্রত্যেকটি দুর্ঘটনা ভিন্ন এবং সেগুলির প্রভাব ক্ষেত্রবিশেষে আলাদা।

ভাগ্যের ভূমিকা:

রমেশ বিশ্বাসকুমারের জীবনরক্ষা নিঃসন্দেহে একটি অলৌকিক ঘটনা। তাঁর সচেতনতা, সিট বেল্ট যথাযথভাবে বাঁধা এবং সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াই হয়তো তাঁকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে এনেছে। তবে এর পেছনে ভাগ্যের বিশাল ভূমিকা রয়েছে বলেও মনে করছেন অনেকে।

এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার মধ্যেও রমেশের বেঁচে যাওয়া এক আশার আলো দেখায়—যেখানে মানবিক বুদ্ধিমত্তা, প্রযুক্তিগত ডিজাইন এবং ভাগ্য একসঙ্গে মিলে কাজ করেছে জীবনের পক্ষে।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *