নিউজ বাংলা অনলাইন ডেস্ক, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ : Mamata Banerjee on Burrabazar Fire: মৃত্যুকূপে পরিণত বড়বাজারের হোটেল, ১৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু — কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
কলকাতার বড়বাজারের মেছুয়া ফলপট্টিতে অবস্থিত এক ছয়তলা হোটেল মুহূর্তে পরিণত হল মৃত্যুকূপে। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারালেন ১৪ জন — যাদের মধ্যে রয়েছেন দুই শিশু এবং এক মহিলা। কেউ ঘুমের মধ্যে দমবন্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন, কেউ বা প্রাণ বাঁচাতে জানলা বা কার্নিস থেকে ঝাঁপিয়েও রক্ষা পাননি।
বৃহস্পতিবার দিঘা সফর সেরে ফিরে ঘটনাস্থলে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছাই হয়ে যাওয়া হোটেল ঘুরে দেখেন, পরিদর্শন করেন আশপাশের বিল্ডিংও। তারপরই জানিয়ে দেন একাধিক কড়া পদক্ষেপের কথা।
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, “এখানকার অনেক বাড়ি ভয়ংকরভাবে বিপজ্জনক। কয়েকদিনের জন্য বাসিন্দাদের সরিয়ে ওই বাড়িগুলি সংস্কার করতে হবে। বহু বহুতলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। বড়বাজারের হোটেলটি সিল করে দেওয়া হবে। হোটেলের সিঁড়ি বন্ধ থাকায় মানুষ নামতেই পারেননি—সেখানেই আটকে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে প্রাণ গেছে আরও বহু মানুষের। তবে আমরা ৯০ জনকে বাঁচাতে পেরেছি।”
তিনি স্পষ্ট জানান, “এই ধরনের বহুতল আর কোনও অনুমোদন পাবে না। পুরসভা পৃথকভাবে তদন্ত করবে। দমকল ও পুলিশকে সারপ্রাইজ ভিজিট করতে বলা হয়েছে। কেউ কেউ ব্যবসায়িক স্বার্থে ইচ্ছাকৃতভাবেও আগুন লাগায়—এটা চলতে দেওয়া যায় না। যারা নিয়ম মানবে না, তাদের বিরুদ্ধে পুরসভা, পুলিশ, দমকল কড়া ব্যবস্থা নেবে। আমি এই বিষয়ে রাফ অ্যান্ড টাফ।”
মমতা আরও জানান, “এই ঘটনার তদন্ত হবে। আপৎকালীন পরিকাঠামো না রাখা একেবারেই ক্ষমার অযোগ্য। এ ধরনের বিপজ্জনক বাড়িগুলিকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। পুরসভা বহুবার বলার পরও সংস্কার হয়নি। প্লাস্টিক মজুত করা, কোনও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছাড়াই হোটেল চালানো — এসব আর চলবে না।”
তিনি আবাসিকদেরও আহ্বান জানান, যেন কলকাতা পুরসভা ও পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করেন। এর আগেই দিঘা থেকে অগ্নিকাণ্ডের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সামাজিক মাধ্যমে জানান, প্রশাসন এবং স্বেচ্ছাসেবীরা মিলে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনে কাজ করছে। রাষ্ট্রপতিও ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার রাত, শহর সাক্ষী ছিল বিভীষিকার। বড়বাজারের ঋতুরাজ হোটেল হয়ে উঠল ১৪ জনের মৃত্যুফাঁদ। প্রশ্ন উঠছে—কার গাফিলতিতে এত বড় দুর্ঘটনা? দমকলমন্ত্রী দায় চাপিয়েছেন সরাসরি হোটেল কর্তৃপক্ষের উপর।