শিক্ষা বাঁচাও আন্দোলনে মেদিনীপুরে এসএফআই-এর মিছিল ও সমাবেশ

শিক্ষা বাঁচাও আন্দোলনে মেদিনীপুরে এসএফআই-এর মিছিল ও সমাবেশ

Spread the love

News Bangla 24×7 Online Desk: চিন্ময়, পশ্চিম মেদিনীপুর: পাঠ্যবইয়ে বিভেদের সিলেবাস, ক্লাসরুমে বেঞ্চভাগের জাতপাতের রাজনীতি এবং শিক্ষা ব্যবস্থার বাণিজ্যিকীকরণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার মেদিনীপুর শহরে মিছিল-সহ সমাবেশ করল এসএফআই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটি।

মেদিনীপুর কলেজ সংলগ্ন নেতাজি মূর্তির পাদদেশে আয়োজিত এই সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন জেলা সভাপতি সুকুমার মাঝি।

সমাবেশে বক্তারা শিক্ষা বাঁচাও—দেশ ও রাজ্য বাঁচাও স্লোগানে, শিক্ষা এবং কাজের অধিকারের দাবিতে রাজ্যজুড়ে আন্দোলন আরও জোরদার করার আহ্বান জানান।

পরিকাঠামো-সংকট, দমন, নৈরাজ্য—তীব্র সমালোচনা এসএফআই-এর

সমাবেশ শেষে সংগঠনের জেলা সাংগঠনিক কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষাঙ্গনে পরিকাঠামোর সংকট, দমন-পীড়ন, নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ পুনরুদ্ধারের দাবিতে ছাত্রসমাজকে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দেওয়া হয়।

সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেন,

“যারা সরকারি স্কুল-কলেজ তুলে দিয়ে শিক্ষা কর্পোরেটদের হাতে তুলে দিতে চায়, যারা টাকার বিনিময়ে পাঠদান ব্যবস্থা তৈরি করছে, যারা ক্লাসরুমে কিংবা মিড-ডে মিলে বিভাজন সৃষ্টি করে, তারা মানবতার শত্রু। রাজ্যে ইতিমধ্যেই ৮ হাজারের বেশি স্কুল বন্ধ হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগে সীমাহীন দুর্নীতি, শিক্ষা-স্বাস্থ্য পরিষেবায় অবহেলা—এসবের বিরুদ্ধে এসএফআই দেশ ও রাজ্যজুড়ে আন্দোলনে নেমেছে।”

“তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নামধারী বহিরাগতদের হুমকি”—অভিযোগ এসএফআই-এর

জেলা সম্পাদক রনিত বেরা অভিযোগ করেন,

“আমাদের কর্মসূচি বানচাল করতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নামধারী বহিরাগতদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। কলেজে ঢুকতে দেবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ছাত্রকে। ক্ষমতা থাকলে নির্বাচিত ছাত্র সংসদের দাবিতে নির্বাচনে আসুক।”

তিনি আরও জানান, গতকাল মেদিনীপুর কলেজে বহিরাগতদের সাহায্যে হামলার চেষ্টা হয়, যা এসএফআই প্রতিহত করেছে।

৩ মার্চ পুলিশ পাহারায় বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে ঢুকে ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায় এবং এক ছাত্রীর ওপর অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে। পরে আদালতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয় বলেও রনিত দাবি করেন।

সমাবেশের কেন্দ্রবিন্দু: শিক্ষার গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা

নেতাজি মূর্তির পাদদেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দেবাঞ্জন দে বলেন,

“শিক্ষাঙ্গন মুক্ত চিন্তার জায়গা। শাসকের ত্রাস ভাঙতে ছাত্রসমাজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

📢 সমাবেশে একাধিক দাবি তুলে ধরল এসএফআই

সমাবেশ থেকে যেসব মূল দাবি উত্থাপন করা হয়—

  • শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা ও দ্রুততা
  • সরকারি স্কুল–কলেজে পরিকাঠামোর উন্নয়ন
  • বেসরকারি শিক্ষায় অত্যধিক ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রণ
  • সরকারি শিক্ষায় বাজেট বৃদ্ধি
  • ছাত্রবিষয়ক অনিয়ম রোধে আলাদা মনিটরিং সেল
  • সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা

এসএফআই নেতৃত্বের অভিযোগ, সরকার শিক্ষার সামগ্রিক উন্নয়নের বদলে বেসরকারিকরণকে বাড়তে দিচ্ছে। এর ফলে সাধারণ পরিবারের ওপর আর্থিক চাপ বাড়ছে এবং গরিব ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *