নিউজ বাংলা অনলাইন ডেস্ক, কোলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ: SSC SCAM : এসএসসি ভবনের সামনে উত্তাল বিক্ষোভ, যোগ্য-অযোগ্য তালিকা প্রকাশের দাবি চাকরি হারানোদের
সোমবার সকালে যোগ্য ও অযোগ্যদের পৃথক তালিকা প্রকাশের দাবিতে এসএসসি ভবনে অভিযানের ডাক দেন আন্দোলনরত চাকরি হারানো শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা। দুপুর ১২টা নাগাদ সল্টলেক করুণাময়ী থেকে মিছিল করে এসএসসি ভবনের সামনে পৌঁছন তাঁরা। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলেও তালিকা প্রকাশ না হওয়ায় বিক্ষোভ আরও উত্তাল হয়ে ওঠে।
চাকরি হারানোদের অভিযোগ, সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে তালিকা প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা মানা হয়নি। এসএসসি ভবনের ভিতরে ১৪ জন প্রতিনিধি বৈঠকে অংশ নেন, আর বাইরে বিক্ষোভে সামিল হন বাকিরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খায় পুলিশ। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, “এটি হকের চাকরি। তালিকা না দিলে আন্দোলন চলবেই।”
পুলিশ বিক্ষোভকারীদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানালেও তাঁরা সাড়া দেননি। একজন ক্ষুব্ধ শিক্ষক বলেন, “আজ ললিপপ নিয়ে বাড়ি ফিরব না। তালিকা দেখে তবেই ফিরব।” আন্দোলনকারীরা জানান, প্রথম থেকে তৃতীয় কাউন্সেলিং পর্যন্ত যাঁরা ছিলেন, তাঁদেরই শুধু তালিকায় রাখা হচ্ছে। বাকিদের অযোগ্য বলে প্রমাণ করার চেষ্টা হচ্ছে।
এসএসসি ভবনের বাইরে অবস্থান নেওয়া বিক্ষোভকারীরা মূল গেট খুলে ভিতরে ঢোকার চেষ্টাও করেন। তাঁদের প্রশ্ন, “মেয়াদ উত্তীর্ণের পরেও কেন কাউন্সেলিং হল?” গেটের সামনে কড়া নিরাপত্তা থাকলেও আন্দোলনকারীরা রাস্তায় বসে পড়েন এবং রাতভর বিক্ষোভের হুঁশিয়ারি দেন।
প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পরে প্রতিনিধি দল বৈঠক শেষে জানান, এসএসসি এখনই তালিকা প্রকাশে অনীহা প্রকাশ করেছে। অভিযোগ, চতুর্থ তালিকা থেকে সবাইকে অযোগ্য হিসেবে দেখানোর চেষ্টা চলছে। কৃষ্ণকান্ত রায়ের কথায়, “যতক্ষণ না আলাদা যোগ্য-অযোগ্য তালিকা প্রকাশ করা হবে, ততক্ষণ অবস্থান চলবে।”
একই সময় গ্রুপ সি ও ডি-র চাকরি হারানো কর্মীরাও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অফিসে অনশনে বসেন।
এসএসসি সূত্রে জানা যায়, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে একাধিক কাউন্সেলিং হয়। অনেক কাউন্সেলিং প্যানেলের মেয়াদ শেষের পর হওয়ায়, সেই নিয়োগের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আন্দোলনকারীরা চান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করে তাঁদের স্বীকৃতি দেওয়া হোক, নয়তো তাঁরা বেতন ফেরত দিতে বাধ্য হবেন।
চাকরি হারানো শিক্ষক অর্ঘ্য পাল জানান, “গেজেট রুলস অনুযায়ী প্যানেলের বৈধতা এক বছর। তাই তার মধ্যেই নিয়োগপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করে সার্টিফাইড করা দরকার।” তবে এসএসসি চেয়ারম্যান আরও দুইদিন সময় চেয়ে আইনগত পরামর্শ নিচ্ছেন বলেও জানা গেছে।
বিক্ষোভকারীরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—তালিকা প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা এসএসসি ভবনের সামনে অবস্থান চালিয়ে যাবেন।