নিউজ বাংলা অনলাইন ডেস্ক, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত : অপেক্ষার অবসান! ২২ দিন পর মুক্তি পেলেন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউ। আতঙ্ক এবং দুশ্চিন্তার মধ্যে এই দীর্ঘ সময় কাটিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী রজনী। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তিনি স্বামীর খোঁজে ছুটে গিয়েছিলেন, কিন্তু কোনো খবর পাচ্ছিলেন না। দীর্ঘ রাত কাটিয়েছেন বিনিদ্র, প্রতিটি মুহূর্তে অপেক্ষা করেছেন স্বামীর ফিরে আসার জন্য। অবশেষে বুধবার সকালে যখন তিনি রাস্তায় বেরিয়েছিলেন, জানতে পারলেন যে পাকিস্তান বাধ্য হয়েছে পূর্ণমকে মুক্তি দিতে। তাঁর স্বামী দেশে ফিরে এসেছেন, আর এখন শুধু তাঁর বাড়ি ফিরে আসার অপেক্ষা।
এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে রজনী বললেন, “প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। সবাইকে ধন্যবাদ জানাই, যারা আমাদের পাশে ছিলেন।” ভারতের কূটনৈতিক সফলতায় মুক্তি পেয়েছেন পাকিস্তান রেঞ্জার্সের হাতে আটক বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউ। বন্দি অবস্থায় তাঁর স্ত্রী রজনী একাধিক জায়গায় দরবার করেছিলেন। আজ, বুধবার, স্বামী দেশে ফিরে আসার খবর পেয়ে পরিবারে স্বস্তি ফিরেছে। রজনী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। মুখ্যমন্ত্রী ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন। চেয়ারম্যান পাশে ছিলেন। সারা দেশবাসী আমাদের এই ক’দিন সঙ্গ দিয়েছে, এবং সবাইকে ধন্যবাদ।”
পূণ্যমের মুক্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক স্তরে সফলতা অর্জিত হয়েছে। পূর্ণমের স্ত্রী রজনী এবং তাঁর পরিবারের জন্য এই মুক্তি যেন একটি নতুন জীবন ফিরিয়ে এনেছে। পূর্ণম পাকিস্তানের হাতে আটক হওয়ার পর থেকে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিএসএফের ডিজি এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সঙ্গে কথা বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রজনীকে ফোন করে আশ্বস্ত করেছিলেন, এবং মঙ্গলবারও পরিবারের খোঁজখবর নিয়েছিলেন। আজ, বুধবার সকালে, পাকিস্তান ওয়াঘা-আটারি বর্ডার দিয়ে ভারতীয় জওয়ানকে মুক্তি দেয়। পূর্ণমের বাবা জানিয়েছেন, ছেলেটি দেশে ফিরেছে, তবে মেডিক্যাল পরীক্ষা শেষে তাঁকে বাড়ি নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, পহেলগাঁও হামলার পরদিন ২৩ এপ্রিল ভুল করে পাক ভূখণ্ডে প্রবেশ করেন পূর্ণমকুমার সাউ, যিনি সেই সময় গাছের তলায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। পাকিস্তান রেঞ্জার্স তাঁকে আটক করে। ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের মাধ্যমে এমন পরিস্থিতিতে জওয়ানদের মুক্তি দেওয়ার প্রথা থাকলেও, ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আবহে বিষয়টি জটিল হয়ে যায়। তবে অবশেষে আজ, বুধবার, বাংলার জওয়ান মুক্তি পেয়েছেন।