নিউজ বাংলা অনলাইন ডেস্ক, খেলাধুলা : IPL 2025 : ফর্মে ফিরতে সময় লেগেছে অনেকটা, কিন্তু শেষটা স্মরণীয় করলেন ঋষভ পন্থ। গোটা আইপিএল মরসুমটা তাঁর কাছে ছিল দুঃস্বপ্নের মতো—একটার পর একটা ম্যাচে ব্যর্থতা সঙ্গী হয়েছে। কিন্তু মরসুমের অন্তিম মুহূর্তে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে শতরান করে নিজেকে চেনালেন নতুন রূপে। ব্যাটে ফিরে এল সেই পুরনো আগ্রাসী মেজাজ। বড় বড় শটে ছুটল রান। চাপমুক্ত পরিবেশে পন্থকে দেখা গেল তাঁর স্বাভাবিক ছন্দে খেলতে—যা এতদিন খুঁজছিল লখনউয়ের সমর্থকেরা।
এই ম্যাচের ফল লখনউয়ের পয়েন্ট টেবিলের উপর কোনও প্রভাব ফেলেনি। তাই হয়তো পন্থ পুরো ম্যাচটা উপভোগ করেছেন নিজের মতো করে। হাসিমুখে খেলেছেন, মেরেছেন বল দেখেই। শতরানের পর উল্লাসও ছিল অনন্য—হেলমেট আর গ্লাভস খুলে মাঠেই করলেন ডিগবাজি! নন-স্ট্রাইক প্রান্তে দাঁড়িয়ে উৎসাহ দিলেন নিকোলাস পুরান। ধারাভাষ্যকারের কণ্ঠে শোনা গেল, “নিজের সেরা ফর্মটা যেন শেষ ম্যাচের জন্যই তুলে রেখেছিলেন পন্থ।” লখনউয়ের গ্যালারি তখন গর্জে উঠেছে অধিনায়কের এই ইনিংসে।
অন্যদিকে, বেঙ্গালুরুর গ্যালারিতে বসে থাকা অনুষ্কা শর্মার মুখ ছিল থমথমে। কোহলিদের প্লে-অফের আশা যে অনেকটাই কমে গিয়েছে পন্থের এই ইনিংসে, তা যেন তিনি বুঝেই গিয়েছিলেন।
চলতি আইপিএলে একটা ট্রেন্ড পরিষ্কার—প্লে-অফ থেকে ছিটকে যাওয়া দলগুলো পরে প্লে-অফের দাবিদার দলগুলোকে হারিয়েছে। পঞ্জাব কিংস, গুজরাত টাইটান্স এবং এখন লখনউ—সব ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, চাপহীন দলগুলিই খেলছে মুক্তভাবে। সেই তুলনায় বেঙ্গালুরু দল ছিল ছন্নছাড়া—বোলিং হতশ্রী, ফিল্ডিং আরও খারাপ, কোনও পরিকল্পনার ছাপই ছিল না।
গত ম্যাচে ওপরে ব্যাট করতে নেমে নজর কেড়েছিলেন পন্থ। এই ম্যাচেও তিন নম্বরে নেমে খেললেন অসাধারণ এক ইনিংস। শুরু থেকেই মারমুখী ভঙ্গিতে খেললেন, যেন ফিরে এসেছেন পুরনো পন্থ। উইকেটের চারদিকে খেলেছেন নানান অপ্রচলিত শট। একবার উইকেটের পেছনে শট মারতে গিয়ে পড়েও যান, কিন্তু ব্যাট থামেনি। অর্ধশতরান পার হওয়ার পর আরও গতি বাড়ে তাঁর ইনিংসে। ভাগ্যও কিছুটা সঙ্গ দেয়—কয়েকটি বল ব্যাটের কানায় লেগে ফিল্ডারের নাগালের বাইরে চলে যায়।
শেষ পর্যন্ত ভুবনেশ্বর কুমারকে কভারের উপর দিয়ে ছক্কা মেরে ৫৫ বলে শতরান পূর্ণ করেন পন্থ। তারপরও থামেননি—৬১ বলে ১১৮ রানে অপরাজিত থাকেন। তাঁর ইনিংসে ছিল ১১টি চার এবং ৮টি ছক্কা।
পন্থের পাশাপাশি দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন মিচেল মার্শও। ৩৭ বলে ৬৭ রান করে লখনউয়ের স্কোরকে আরও চাঙ্গা করে দেন। এই আইপিএলে মার্শই লখনউয়ের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটার, ৬০০-এর বেশি রান করেছেন তিনি।
পন্থ ও মার্শের ব্যাটে ভর করে লখনউ ২০ ওভারে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে তোলে ২২৭ রান। অর্থাৎ, প্রথম দুইয়ে জায়গা পেতে হলে কোহলিদের সামনে রয়েছে এক বিশাল রান তাড়ার চ্যালেঞ্জ।
